বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম, আজকের আলোচনার বিষয় হচ্ছে সূরা হাশরের শেষ তিন আয়াত বাংলা উচ্চারণ ও অর্থ সহ এবং পাঠের ফজিলত।
Table of Contents
Toggleসূরা হাশরের শেষ তিন আয়াত
هُوَ اللَّهُ الَّذِي لَا إِلَٰهَ إِلَّا هُوَ ۖ عَالِمُ الْغَيْبِ وَالشَّهَادَةِ ۖ هُوَ الرَّحْمَٰنُ الرَّحِيمُ | ٢٢ |
هُوَ اللَّهُ الَّذِي لَا إِلَٰهَ إِلَّا هُوَ الْمَلِكُ الْقُدُّوسُ السَّلَامُ الْمُؤْمِنُ الْمُهَيْمِنُ الْعَزِيزُ الْجَبَّارُ الْمُتَكَبِّرُ ۚ سُبْحَانَ اللَّهِ عَمَّا يُشْرِكُونَ | ٣٢ |
هُوَ اللَّهُ الْخَالِقُ الْبَارِئُ الْمُصَوِّرُ ۖ لَهُ الْأَسْمَاءُ الْحُسْنَىٰ ۚ يُسَبِّحُ لَهُ مَا فِي السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ ۖ وَهُوَ الْعَزِيزُ الْحَكِيمُ | ٤٢ |
সূরা হাশরের শেষ তিন আয়াত বাংলা উচ্চারণ
২২ | হুওয়াল্লাহুল লাজি লা ইলাহা ইল্লাহু- আলিমুল গাইবি ওয়াশশাহাদাতি হুওয়ার রাহমানুর রাহিম। |
২৩ | হুওয়াল্লাহুল লাজি লা ইলাহা ইল্লাহু- আল মালিকুল কুদ্দুসুস সালামুল মু’মিনুল মুহাইমিনুল আজিজুল জাব্বারুল মুতাকাব্বির। সুবহানাল্লাহি আম্মা ইউশরিকুন। |
২৪ | হুওয়াল্লাহুল খালিকুল বারিউল মুছাওয়্যিরু লাহুল আসমাউল হুসনা। ইউসাব্বিহু লাহু মা ফিসসামাওয়াতি ওল আরদি ওহুয়াল আজিজুল হাকিম। |
সূরা হাশরের শেষ তিন আয়াত বাংলা অর্থ
২২ | তিনিই আল্লাহ তাআলা, তিনি ব্যতীত কোন উপাস্য নেই; তিনি দৃশ্য ও অদৃশ্যকে জানেন তিনি পরম দয়ালু, অসীম দাতা। |
২৩ | তিনিই আল্লাহ তিনি ব্যতিত কোন উপাস্য নেই। তিনিই একমাত্র মালিক, পবিত্র, শান্তি ও নিরাপত্তাদাতা, আশ্রয়দাতা, পরাক্রান্ত, প্রতাপান্বিত, মাহাত্ম্যশীল তারা যাকে অংশীদার করে আল্লাহ তাআলা তা থেকে পবিত্র। |
২৪ | তিনিই আল্লাহ তাআলা, স্রষ্টা, উদ্ভাবক, রূপদাতা, উত্তম নাম সমূহ তাঁরই। নভোমন্ডলে ও ভূমন্ডলে যা কিছু আছে, সবই তাঁর পবিত্রতা ঘোষণা করে। তিনি পরাক্রান্ত প্রজ্ঞাময়। |
সূরা হাশর আয়াত নং ২২, ২৩, ২৪।
সূরা হাশরের শেষ তিন আয়াতের ফজিলত
وَعَنْ مَعْقِلِ بْنِ يَسَارٍ عَنِ النَّبِىِّ ﷺ قَالَ: «مَنْ قَالَ حِينَ يُصْبِحُ ثَلَاثَ مَرَّاتٍ: أَعُوذُ بِاللّٰهِ السَّمِيعِ الْعَلِيمِ مِنَ الشَّيْطَانِ الرَّجِيمِ فَقَرَأَ ثَلَاثَ اٰيَاتٍ مِنْ اٰخِرِ سُورَةِ ﴿الْحَشْرِ﴾. وَكَّلَ اللّٰهُ بِه سَبْعِينَ أَلْفَ مَلَكٍ يُصَلُّونَ عَلَيْهِ حَتّٰى يُمْسِىَ وَإِنْ مَاتَ فِىْ ذٰلِكَ الْيَوْمِ مَاتَ شَهِيْدًا. وَمَنْ قَالَهَا حِينَ يُمْسِىْ كَانَ بِتِلْكَ الْمَنْزِلَةِ». رَوَاهُ التِّرْمِذِىُّ وَالدَّارِمِىُّ. وَقَالَ التِّرْمِذِىُّ: هٰذَا حَدِيثٌ غَرِيبٌ
মাকিল ইবনু ইয়াসার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যক্তি সকালে (ঘুম থেকে) উঠে তিনবার বলবে, ‘‘আ‘ঊযু বিল্লা-হিস সামী‘ইল ‘আলীমি মিনাশ্ শাইত্ব-নির রজীম’’ এবং এরপর সূরা হাশর-এর শেষের তিন আয়াত পড়বে আল্লাহ তা‘আলা তার জন্য সত্তর হাজার মালাক (ফেরেশতা) নিযুক্ত করবেন। এরা তার জন্য সন্ধ্যা পর্যন্ত দু‘আ করতে থাকবেন। যদি এ দিন সে মারা যায়, তার হবে শাহীদের মৃত্যু। যে ব্যক্তি এ দু‘আ সন্ধ্যার সময় পড়বে, সেও এ একই মর্যাদা পাবে। ইমাম তিরমিযী বলেছেন, এ হাদীসটি গরীব।
তিরমিযী ২৯২২, আহমদ ২০৩০৬, দারেমী ৩৪৬৮, মুজামুল কাবীর লিত তাবারানী ৫৩৭, শুআবুল ঈমান ২২৭২, যঈফ আত তারগীব ৩৭৯, যঈফ আল জামি‘ ৫৭৩২।
হাদীসটি যঈফ বা দুর্বল, কারণ এর সানাদে খালিদ ইবনু ত্বহমান একজন দুর্বল রাবী।
حَدَّثَنَا مَحْمُودُ بْنُ غَيْلاَنَ، حَدَّثَنَا أَبُو أَحْمَدَ الزُّبَيْرِيُّ، حَدَّثَنَا خَالِدُ بْنُ طَهْمَانَ أَبُو الْعَلاَءِ الْخَفَّافُ، حَدَّثَنِي نَافِعُ بْنُ أَبِي نَافِعٍ، عَنْ مَعْقِلِ بْنِ يَسَارٍ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ “ مَنْ قَالَ حِينَ يُصْبِحُ ثَلاَثَ مَرَّاتٍ أَعُوذُ بِاللَّهِ السَّمِيعِ الْعَلِيمِ مِنَ الشَّيْطَانِ الرَّجِيمِ وَقَرَأَ ثَلاَثَ آيَاتٍ مِنْ آخِرِ سُورَةِ الْحَشْرِ وَكَّلَ اللَّهُ بِهِ سَبْعِينَ أَلْفَ مَلَكٍ يُصَلُّونَ عَلَيْهِ حَتَّى يُمْسِيَ وَإِنْ مَاتَ فِي ذَلِكَ الْيَوْمِ مَاتَ شَهِيدًا وَمَنْ قَالَهَا حِينَ يُمْسِي كَانَ بِتِلْكَ الْمَنْزِلَةِ ” . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ غَرِيبٌ لاَ نَعْرِفُهُ إِلاَّ مِنْ هَذَا الْوَجْهِ .
মাকিল ইবনু ইয়াসার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ যে ব্যক্তি সকালে উপস্থিত হয়ে তিনবার বলবে “আঊযু বিল্লাহিস্ সামীইল আলীমি মিনাশ্ শাইতানির রাজীম”, তারপর সূরা আল-হাশরের শেষের তিন আয়াত পাঠ করবে, আল্লাহ্ তা’আলা তার জন্য সত্তর হাজার ফেরেশতা নিয়োজিত করবেন। তারা সন্ধ্যা পর্যন্ত তার জন্য দু’আ করতে থাকবেন। সে ঐ দিন ইন্তেকাল করলে তার শহীদী মৃত্যু হবে। যে ব্যক্তি সন্ধ্যায় এরূপ পাঠ করবে, সেও একই রকম গৌরবের অধিকারী হবে।
মেশকাত ২১৫৭, তালীকুর রাগীব (২/২২৫)
আবূ ঈসা বলেনঃ এ হাদীসটি গারীব।
হাদীসটি যঈফ বা দুর্বল, কারণ এর সানাদে খালিদ ইবনু ত্বহমান একজন দুর্বল রাবী।
সকালে ও সন্ধ্যায় সূরা হাশরের শেষ তিন আয়াত পাঠের ফজিলত সম্পর্কে শুধুমাত্র একজন সাহাবী থেকে উপরিউক্ত হাদিসটি বর্ণিত হয়েছে এবং সেটা বেশিরভাগ মুহাদ্দিসীনদের মতে যঈফ। যেহেতু সকাল ও সন্ধ্যায় এ ছাড়াও ফজিলতপূর্ণ বহু আমলের কথা বিভিন্ন সহিহ হাদিসে বর্ণিত হয়েছে সেহেতু আমাদের উচিত সেগুলোর প্রতি বেশি গুরুত্ব দেয়া। বিশেষভাবে আয়াতুল কুরসি পাঠের উপর বেশি গুরুত্ব দেয়া উচিত।