Generic selectors
Exact matches only
Search in title
Search in content
Post Type Selectors

ঈদ শব্দের অর্থ কি? ঈদের ইতিহাস. ঈদের খুতবা শোনা কি ওয়াজিব?

ঈদ-শব্দের-অর্থ-কি-ঈদের-ইতিহাস.-ঈদের-খুতবা-শোনা-কি-ওয়াজিব

বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম, আজকের আলোচনার বিষয় হচ্ছে ঈদ শব্দের অর্থ কি, ঈদের ইতিহাস, ঈদের খুতবা শোনা কি ওয়াজিব, ঈদের খুতবা দেওয়ার নিয়ম এবং ঈদের খুতবা কয়টি।

ঈদ শব্দের অর্থ কি?

ঈদ অর্থ আনন্দ; এটি আরবি শব্দ; যা ‘আওদ’ শব্দমূল থেকে উদ্ভূত। এর শাব্দিক অর্থ হলো বারবার ফিরে আসা; এই দিনটি বারবার ফিরে আসে বলে এর নামকরণ হয়েছে ঈদ। আল্লাহ তা’আলা এ দিনে তার বান্দাকে নিয়ামত ও অনুগ্রহ দ্বারা বারবার ধন্য করে থাকেন, বারবার এহসান করেন; রমযানের পানাহার নিষিদ্ধ করার পর আবার পানাহারের আদেশ প্রদান করেন। ফিতরা প্রদান ও গ্রহণ, হজ পালন ও কুরবানীর গোশত ভক্ষণ ইত্যাদি নিয়ামাত বছর ঘুরিয়ে তিনি বারবার বান্দাদেরকে ফিরিয়ে দেন। এতে মানুষের প্রাণে আনন্দের সঞ্চার হয়। এসব কারণে এ দিবসের নামকরণ হয়েছে ঈদ।

ঈদুল ফিতর অর্থ কি

ঈদ অর্থ আনন্দ; আর ফিতর শব্দের অর্থ হলো ভেঙ্গে ফেলা, বিদীর্ণ করা। অতএব ঈদুল ফিতর অর্থ হলো রোজা ভাঙার আনন্দ। মুসলমানরা রমজানের চাঁদ দেখার সাথে সাথে রোজা রাখা আরম্ভ করে এবং শাওয়ালের চাঁদ দেখার সাথে সাথে রোজা ভেঙ্গে দেয় তথা রোজা রাখা ছেড়ে দেয়। সে কারণে এটিকে ঈদুল ফিতর তথা রোজা ভাঙ্গার আনন্দ বলা হয়।

ঈদুল আযহা অর্থ কি

ঈদ ও আযহা দুটিই আরবী শব্দ। ঈদ অর্থ আনন্দ; আর আযহা অর্থ নৈকট্য অর্জন। অতএব ঈদুল আযহা অর্থ হলো নৈকট্য অর্জনের আনন্দ। ঈদুল আযহার দিনে আল্লাহর নৈকট্য অর্জনের উদ্দেশ্যে উৎসর্গকৃত পশুকে কুরআনে কুরবান নামে অভিহিত করা হয়েছে। হাদিসে কুরবান শব্দের পরিবর্তে উযহিয়াহ ও যাহিয়া শব্দ দুটি ব্যবহার করা হয়েছে। যার অর্থ নৈকট্য। আর আযহা শব্দটি এসেছে উযহিয়াহ ও যাহিয়া শব্দ থেকে। আল্লাহর নৈকট্য অর্জনের উদ্দেশ্যে উৎসর্গ কৃত পশু অর্থাৎ উযহিয়াহ ও যাহিয়া এর নামে এই দিনের নামকরণ করা হয়েছে ঈদুল আযহা।

ঈদের ইতিহাস

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন মক্কা থেকে মদিনায় হিজরত করলেন তখন মদীনাবাসীদের মধ্যে বিশেষ দুটি দিবস ছিল, যে দিবসে তারা খেলাধুলা করত। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জিজ্ঞেস করলেন এ দু’টি দিনের তাৎপর্য কী? মদীনাবাসীরা উত্তর দিল আমরা জাহেলী যুগ থেকে এ দু’দিনে খেলাধুলা করে আসছি। তখন রাসূলে করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, আল্লাহ রাব্বুল আলামীন এ দু’দিনের পরিবর্তে এর চেয়েও উত্তম দুটি দিন তোমাদেরকে দান করেছেন। আর সেই দিন দু’টি হল : ঈদুল আযহা ও ঈদুল ফিতর।

আবু দাউদ : ১১৩৪; নাসাঈ : ১৫৫৬

ঈদের খুতবা শোনা কি ওয়াজিব?

ঈদের খুতবায় উপস্থিত হওয়ার সঠিক বিধান হচ্ছে যে, তা সুন্নাত।

আবদুল্লাহ ইবনে সায়িব রাঃ থেকে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাঃ এর সাথে ঈদে উপস্থিত হলাম; অতঃপর তিনি সালাত সম্পন্ন করে বললেন, আমি খুতবা প্রদান করব; তাই যে খুতবা শোনার জন্য বসতে চাইবে সে বসুক, আর যে চলে যেতে চায়, সে চলে যাক।

আবু দাউদ আলএ. হা/১১৫৫ হাদীসটিকে ইমাম আলবানী সহীহ বলেছেন।

ঈদের খুতবা কয়টি?

শাইখ মুহাম্মাদ বিন উসাইমীন রহঃ বলেন, যে ব্যক্তি বুখারী, মুসলিম ও অন্যান্যদের সংকলিত হাদীসের দিকে লক্ষ্য করবে, তার জন্য স্পষ্ট হবে যে, নবী সাঃ (ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আযহার) শুধুমাত্র একটিই খুতবা দিয়েছেন।

খুতবার আগে ঈদের সালাত

ইমাম ইবনু কুদামা রাঃ খুতবার পূর্বে ঈদের সালাত আদায়ের উপর ইজমা (ঐক্যমত) বর্ণনা করেছেন। ইমাম ইবনুল মুনযির রহঃ বলেন, রাসূল সাঃ হতে প্রমাণিত আছে যে, তিনি ঈদের দিন খুতবার পূর্বে সালাত আরম্ভ করতেন, তেমনি ভাবে হেদায়াতপ্রাপ্ত খুলাফায়ে রাশেদীনও করতেন, এবং এই মতের উপর মুসলিম বিশ্বের সমস্ত আলেমগণ একমত আছেন। ইবনে আব্বাস রাঃ বলেন,

আমি নবী সাঃ, আবু বকর, উমর ও উসমান রাঃ এর সাথে উপস্থিত ঈদের সালাতে থেকেছি, তারা সবাই খুতবার পূর্বে (ঈদের) সালাত আদায় করতেন।

বুখারী তাও, হা/৯৬২, মুসলিম মাশা, হা/২০৮৯ ইবনে উমর রা. হতে বর্ণিত, নাসাঈ ম. হা/১৫৬৪, তিরমিযী মা, হা/৫৩১, মিশকাত হা. হা/৭০৪

খুতবায় তাকবীর উচ্চারণ

খুতবা কি তাকবীর দিয়ে শুরু করবে? নাকি আল্লাহর প্রশংসা দিয়ে? এমর্মে দুইটি মত রয়েছে।

১ম মত: মুস্তাহাব হল তাকবীর দিয়ে খুতবার সূচনা করা। আর এতে হানাফী, মালেকী, শাফেয়ী ও হাম্বলী চার মাযহাবের ঐকমত্য রয়েছে।

২য় মত: আল্লাহর প্রশংসা দিয়ে শুরু করা। ইবনে তাইমিয়া, ইবনুল কায়্যিম, ইবন বায রহ. এটাকেই গ্রহণ করেছেন; আর ইমাম শাওকানী এ মতের দিকে ঝুঁকেছেন।

ঈদের খুতবা দেওয়ার নিয়ম

হানাফী, মালেকী, শাফেয়ী ও হাম্বলী চার মাযহাবের ঐকমত্য পোষণ করে বলেছেন যে, ঈদুল ফিতরের খুতবার আলোচ্য বিষয় হবে যাকাতুল ফিতরের বিধি-বিধান।

আর ইমাম শাফেঈ রহ. এক বর্ণনায় জিকিরের তাৎপর্য, তাকওয়ার অসিয়ত, সৎকর্ম সম্পাদনে প্রতিযোগিতা যেমন কুরআন তেলাওয়াত ইত্যাদি বিষয় সংশ্লিষ্ট থাকার কথা উল্লেখ করেছেন। ইবন বায রহ. এর মতও তাই।

Share the Post

Rate the Post

Rating Summary

0.0
0.0 out of 5 stars (based on 0 reviews)
Excellent0%
Very good0%
Average0%
Poor0%
Terrible0%

Latest Reviews

There are no reviews yet. Be the first one to write one.

Latest Post

Scroll to Top